ডিএ মামলা নিয়ে আবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ শুনানির তারিখ এবং রাজ্যের নতুন লিখিত জমা দেওয়া ৬২ পাতার নথি ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য এই মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর রায়ের ওপর তাদের মহার্ঘ্যভাতা প্রাপ্তির বিষয়টি নির্ভর করছে।
সুপ্রিম কোর্টের ১ সেপ্টেম্বরের আদেশ অনুযায়ী, ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, দুপুর ২টোয়। তবে, এই শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হবে। কারণ, ৮ সেপ্টেম্বরের কার্যতালিকা (cause list) এখনও প্রকাশিত হয়নি। বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বেঞ্চে যাতে নির্দিষ্ট সময়ে শুনানিটি সম্ভব হয়, তার জন্য আগে থেকেই এই অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এর ফলে ৮ সেপ্টেম্বর অন্য কোনও মামলা ওই আদালতে নিবন্ধিত হবে না এবং ডিএ মামলার শুনানি সুনিশ্চিত করা যাবে।
রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল একটি ৬২ পাতার লিখিত যুক্তি জমা দিয়েছেন, যেখানে মূলত দুটি অধ্যায়ে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে।
প্রথম অধ্যায়: যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও ডিএ-র বাধ্যবাধকতা।
এই অধ্যায়ে রাজ্য সরকার যুক্তি দিয়েছে যে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুযায়ী, রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে আইনত বা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য নয়। রাজ্যের মতে, কলকাতা হাইকোর্ট বা ট্রাইবুনালও রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের ফর্মুলা অনুযায়ী ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি। সুতরাং, রাজ্য নিজের আর্থিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ডিএ নির্ধারণ করার অধিকারী।
দ্বিতীয় অধ্যায়: সারা ভারতব্যাপী প্রভাব।
রাজ্যের যুক্তি অনুযায়ী, ভারতের প্রায় ৫০% রাজ্য কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেয় না। যদি সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়, তবে তার প্রভাব শুধু পশ্চিমবঙ্গের ওপর নয়, বাকি রাজ্যগুলোর ওপরেও পড়বে। এই বিষয়টি তুলে ধরে রাজ্য বোঝাতে চেয়েছে যে এটি কেবল পশ্চিমবঙ্গের একার সমস্যা নয়, বরং একটি সারা ভারতব্যাপী বিষয়।
রাজ্যের এই যুক্তিগুলো ৮ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে তুলে ধরা হবে এবং এর পাল্টা যুক্তি দেবেন বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবীরা। এখন দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্ট কোন দিকে রায় দেয় এবং প্রাপ্য মহার্ঘ্যভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ কী হয়।
