নিরাপত্তার আশ্রয় খুঁজতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে প্রাণ গেল এক ইউক্রেনীয় শরণার্থী তরুণীর। নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবর উদ্ধৃত করে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে গত ২২ আগস্ট রাত ৯টা ৪৬ মিনিটে লিনক্স ব্লু লাইন ট্রেনে ওঠেন ইউক্রেনের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী ইরিনা জারুতস্কা। ট্রেনে উঠে তিনি আপনমনে মোবাইল দেখছিলেন। কিন্তু বিপদ যে তাঁর এত কাছে এসে দাড়িয়েছে তা টের পাননি। মাত্র মিনিট চারেকের মধ্যেই ডিকার্লস ব্রাউন জুনিয়র নামের এক দুষ্কৃতী ভাঁজ করা ছুরি নিয়ে হঠাৎ জারুতস্কার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং অন্তত তিনবার আঘাত করেন, যার একটি তাঁর গলায় লাগে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হামলার পর ব্রাউন নিজের সোয়েটশার্ট খুলে ফেলে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখনই যাত্রীরা তার হাত থেকে রক্ত ঝরতে দেখেন। অন্যদিকে জারুতস্কা গলা চেপে ধরলেও দ্রুত রক্তক্ষরণে তিনি সিটে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ব্রাউন পরের স্টপেজে নেমে গেলে সেখানেই তার ছুরিটি উদ্ধার হয়। ঘটনার সময় ট্রেনে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকলেও তারা অন্য বগিতে ছিলেন। পুলিশ পৌঁছতে ছয় মিনিট সময় লাগে। তাকে প্রথমে হাতের আঘাতের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
মিসাইল, গোলাগুলি, প্রতিদিন মানুষের মৃত্যু, ইউক্রেনে এমন যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্যই শান্তির খোঁজে সেদেশ থেকে আমেরিকা চলে আসেন ইরিনা জারুতস্কা। কিন্তু মার্কিন দেশে যুদ্ধ না থাকলেও দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার হাল যে খুব খারাপ তা তাঁর ডাকা নৈশভোজে রিপাবলিকান জনপ্রতিনিধিদের সামনেই তুলে ধরেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপরাধপ্রবণ শহরগুলো যেমন পোর্টল্যান্ড, শিকাগো ও নিউ অরলিন্সে ফেডারেল বাহিনী মোতায়েনের কথাও বলেন তিনি।
আদালতের নথি অনুযায়ী, ব্রাউনের অপরাধের খোঁজ মিলেছে সেই ২০১১ সালেও। সেই থেকেই শুরু। তার বিরুদ্ধে অস্ত্রসহ ডাকাতি ও হুমকির মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল। তিনি পাঁচ বছর কারাভোগ করেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফের গ্রেফতার হন ৯১১ নম্বরে ভুয়ো কল করার জন্য। এমন ঘটনার পর শার্লট এরিয়া ট্রানজিট সিস্টেম জানিয়েছে যে তারা বাজেট তিন গুণ করে পুরনো ক্যামেরা বদলে আধুনিক প্রযুক্তি বসাচ্ছে। অন্যদিকে সিটি কাউন্সিল বাস ও ট্রেনে পুলিশ টহল বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনা করছে।
