জেন জেড প্রতিবাদ আন্দোলনে উত্তাল নেপাল। ২৬ টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করার প্রতিবাদে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। কিন্তু ক্রমেই সেই আন্দোলনের অন্যতম ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় সরকার ও প্রশাসনের লাগামছাড়া দুর্নীতি। বিক্ষোভকারীরা দেশের পার্লামেন্ট ভবন-সহ বিভিন্ন সরকারি ভবনে অগ্নি সংযোগ করে। ভাঙচুর ও লুঠপাট চালায়। সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ সুদান গুরুং। বুধবার সুদান ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে লিখেছেন, নেপাল সরকারের পতন হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে জিতে গিয়েছে যুব সম্প্রদায়। এখন ভবিষ্যৎ হল এই যুব সম্প্রদায়।
দেশের কেপি শর্মা ওলি সরকারের উপর যে যুব সম্প্রদায়ের ব্যাপক ক্ষোভ ছিল বিক্ষোভের ধরনেই সেটা স্পষ্ট। বিক্ষোভকারীরা দেশের পার্লামেন্ট ভবন, প্রেসিডেন্ট হাউস-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর চালিয়েছে। লাগিয়ে দিয়েছে আগুন। দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, এক বর্তমান উপপ্রধানমন্ত্রী সহ একাধিক মন্ত্রী ও নেতাকে রাস্তায় ফেলে তারা পিটিয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের আগুনে প্রাণ গিয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর। ললিতপুরে নাখখু জেলেও ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। সরকার বিরোধীদের অনেককেই জেলমুক্ত করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়েছে সেনা। বুধবার সেনা কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়েছে, কোথাও কোনও রকম ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার ঘটনা ঘটলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল বিক্ষোভকারীদের অবিলম্বে হিংসার পথ থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশের সম্পদের কোনও ক্ষতি মেনে নেওয়া হবে না। সমস্যা থাকতেই পারে, সেটা আলোচনার মাধ্যমেই মেটাতে হবে।
দেশের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে নারায়ণ আচার্য নামে এক বিক্ষোভকারী বললেন, “আমাদের বন্ধু ও যুব সম্প্রদায়কে খুন করা হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা বর্তমান সরকারের অপসারণ চাইছি। আমরা চাইছি অপরাধীদের বিচার।”
নেপালের চলতি পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ। ইউরোপের একাধিক দেশও নেপালে অবিলম্বে শান্তি ফেরানোর জন্য সওয়াল করেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কাছে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভাঙচুর, বিক্ষোভ কখনওই কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে না। বরং বিবদমান সব পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
