প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের দাবিতে দেশ জুড়ে হয়েছে বিক্ষোভ। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেও এখনও নেভেনি বিক্ষোভের আগুন। বিক্ষোভকারীরা দেশের পার্লামেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট সহ একাধিক প্রশাসনিক ভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে সেনা। বুধবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোনও রকম লুঠতরাজ, ভাঙচুর, হামলা, সরকারি ও বেসরকারি ভবনের উপর হামলা মেনে নেওয়া হবে না। যারা এই ধরনের ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেল এক আবেদনে, বিক্ষোভকারীদের সব ধরনের হিংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু ভাঙচুর, লুটপাট করলে সেই সমস্যা মেটে না। বরং আলোচনার টেবিলেই সমস্যার সমাধান হয়। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে সেনাপ্রধান বলেন, সবার আগে আমাদের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। বিক্ষোভকারীরা আমাদের ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলির উপর যে হামলা চালাচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ির উপর আক্রমণ চলছে, এটা কখনওই চলতে পারে না। এই মুহূর্তে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হল, দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। জনজীবনকে সুরক্ষিত করা। সেনাপ্রধান আরও বলেন, চলতি অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে কিছু সুবিধাবাদী মানুষ। তারাই এই ধরনের ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের সঙ্গে যুক্ত। গত দুদিনে হিংসাত্মক ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন সেনাপ্রধান অশোক রাজ। এই হিংসাত্মক ঘটনায় যাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাঁদেরও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। অশোক রাজ আরও বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং দেশবাসীকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখা সেনাবাহিনীর কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। মানুষের বাক স্বাধীনতা রক্ষা করতেও সেনাবাহিনী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দেশের ২৬ টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে নিষিদ্ধ করার কারণে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে নেপালে শুরু হয় সরকার বিরোধী তুমুল বিক্ষোভ আন্দোলন। যে আন্দোলনের বলি হয়েছে অন্তত ১৯ জন। যদিও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। এমনকি পদত্যাগ করতে হয়েছে এক ডজন মন্ত্রীকেও। পরিস্থিতি সামাল দিতেই দেশের শাসনভার হাতে তুলে নিয়েছে সেনা।