শুক্রবার ওমানের বিরুদ্ধে এবারের এশিয়া কাপ অভিযান শুরু করতে চলেছে পাকিস্তান। এদিকে এই ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে অতীতে বাবর-রিজওয়ানের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় পাকিস্তানের জনৈক সাংবাদিকের রোষের মুখে পড়তে হল পাক দলের হেড কোচ মাইক হেসনকে। যে ঘটনার জেরে কার্যত অপ্রস্তুতে পড়ে যান নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার।
খারাপ পারফরম্যান্সের জেরে এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়েন বাবর আজম এবং মহম্মদ রিজওয়ান। দল ঘোষণার বিষয়ে পাক কোচ খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছিলেন, টি-টোয়েন্টিতে দুই মহারথীর স্ট্রাইক রেট-ই আসল সমস্যা। মন্থর স্ট্রাইক রেটের কারণেই বাদ পড়তে হয়েছে দুজনকে। বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক সম্মেলনে জনৈক সাংবাদিক সেকথাগুলি মনে করিয়ে দিয়ে হেসনকে কার্যত মেজাজ দেখিয়েই জিজ্ঞেস করেন, দুই তারকা ক্রিকেটারকে দল থেকে বাদ দেওয়ার কারণ প্রকাশ্যে তুলে ধরার সাহস পেলেন কীভাবে পাক কোচ?
উক্ত পাকিস্তানি সাংবাদিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “আপনি খোলাখুলিভাবে বাবর এবং রিজওয়ানের দুর্বলতা সম্পর্কে কথা বলেছেন। তাহলে আমি জানতে চাই, আজকাল তো কোচেরা খেলোয়াড়দের দুর্বলতা সম্পর্কে খোলাখুলিভাবে কথা বলেন না। আপনি কোথা থেকে এত সাহস পেলেন? আর আপনি কেন এই বিষয়ে সরাসরি এত কথা বললেন?” প্রশ্নকর্তার এহেন আচরণে খুব স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়ে যান পাকিস্তানের হেড কোচ মাইক হেসন। কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েই তিনি বলেন, “আমি আপনার প্রশ্নের প্রথম অংশটি ঠিক বুঝতে পারছি না।”
প্রশ্নটি পুনরায় করতে বলার অনুরোধে অবশ্য সুরটা কিছুটা নরম করতে দেখা গিয়েছে সাংবাদিককে। তিনি পুনরায় বলেন, “আমি বলছি, বাবর এবং রিজওয়ানের খেলার ধরণ ঠিক ছিল না, একথা প্রকাশ্যে বলার ব্যাপারে আপনি খুব স্পষ্ট ছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বাবরের এবং রিজওয়ানের স্ট্রাইক রেট নিয়ে কিছু একটা বলেছিলেন আপনি। আপনি কীভাবে প্রকাশ্যে এমনটা বলতে পারলেন?”
এর জবাবে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছেন হেসন। তিনি জানান, খেলোয়াড়দের প্রতি তিনি সৎ বলেই এমনটা খোলামেলা বলতে পেরেছেন।
হেসনের কথায়, “খেলোয়াড়দের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সৎ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুনিষ্ঠভাবে বিষয়গুলি দেখা গুরুত্বপূর্ণ। আমি কারও দুর্বলতা নিয়ে কথা বলিনি। আমি যা ইঙ্গিত করেছি তা হল, আধুনিক খেলাটি কীভাবে খেলা হয় এবং স্ট্রাইক রেট কতটা প্রয়োজন। বিশেষ করে, ভালো কন্ডিশনে। সমস্ত খেলোয়াড়ই চায় কোচেরা তাদের প্রতি সৎ থাকুক। আর এটাই আপনার দায়িত্ব। আপনি যদি একজন খেলোয়াড়কে পছন্দ করেন বা একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন, তার অর্থ এই নয় যে আপনি সৎ হতে পারবেন না।”
এদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে পাক কোচকে হেনস্থার মুহূর্তটি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে নেট দুনিয়ায়। একজন সাংবাদিক জাতীয় দলের কোচের প্রতি এহেন আচরণ কীভাবে করতে পারেন, শুরু হয়েছে সেই চর্চাই।