পাহাড়ের আকর্ষণ দুর্নিবার, বাধা মানে না বয়েস।কলকাতার নামী নিউরোসার্জন ডা. অজয় আগরওয়াল অপারেশন থিয়েটারের বাইরে তাঁর আরেক প্রিয় জগৎ পাহাড়েই খুঁজে পান। ৬১ বছর বয়সেও তিনি সম্প্রতি আফ্রিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো জয় করে ফিরে এসেছেন শহরে এবং আবার নতুন উদ্যমে রোগীদের অস্ত্রোপচারে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
উডল্যান্ডস মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের এই চিকিৎসককে ১২ বছর আগে এক বন্ধু ট্রেকিংয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পার্ক সার্কাসের বাসিন্দা আগরওয়ালের আনুষ্ঠানিক পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ না থাকলেও পাহাড়ের প্রতি গভীর ভালোবাসা তাঁকে সাঁতার, ম্যারাথন দৌড়সহ বিভিন্ন খেলাধুলায় অনুপ্রাণিত করেছে, যা তাঁকে উচ্চশৃঙ্গ অভিযানের জন্য প্রস্তুত করেছে।
ডা. আগরওয়াল বলেন, “গত ১২ বছর ধরে আমি প্রতি বছরই পাহাড়ে যাই। একাধিক উচ্চতর ট্রেক করেছি, পাঁচ বছর আগে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পও গিয়েছিলাম। তার পর এবার কিলিমাঞ্জারো।”
এর আগে তিনি লাদাখের স্টক কাংরি (২০,১৮০ ফুট), কাং ইয়াস্তে (২১,০০০ ফুট) এবং নেপালের অন্নপূর্ণা সার্কিট সম্পূর্ণ করেছেন। এবার কিলিমাঞ্জারো অভিযানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও পাঁচজন, যাদের মধ্যে ছিলেন কলকাতার রেডিওলজিস্ট ডা. সি. এল. রাজক। আফ্রিকার এই ১৯,৩৪০ ফুট উঁচু শৃঙ্গ বিশ্বের সাতটি বিখ্যাত সামিটের একটি এবং এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ফ্রি-স্ট্যান্ডিং আগ্নেয়গিরি।
ছয় দিন ধরে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে ট্রেক করে ষষ্ঠ দিনে শীর্ষে পৌঁছান তাঁরা। বয়স যখন অবসরের পথে হাঁটার, তখনও আগরওয়াল প্রতিযোগিতামূলক সাঁতার ও ম্যারাথনে সক্রিয় থেকে শরীরকে ফিট রাখছেন, যাতে পাহাড় ডাকে সাড়া দিতে পারেন। তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য রাশিয়া ও ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস।
ডা. আগরওয়ালের কথায়, “নিউরোসার্জারি আমার প্রথম প্রেম। প্রতিটি সফল অস্ত্রোপচার আমাকে তৃপ্তি দেয়। আবার উচ্চতায় ট্রেকিং এক অন্যরকম চ্যালেঞ্জ, যা আমাকে প্রবল শক্তি দেয়। পাহাড় থেকে ফিরে এসে রোগীর যত্ন নিতে নতুন উদ্যম পাই।”
