পাশাপাশি দুটি দেশ কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনীতি থেকে নিরাপত্তা, সামরিক সহযোগিতা থেকে সংস্কৃতির নানা আদানপ্রদান – কত সম্পর্কের মালা গেথেছে দুই পড়শি।কিন্তু এবার যেন তাতেই তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল, সুসম্পর্কের কফিনে যেন পুঁতে দেওয়া হল শেষ পেরেক।কারন এবার খোলাখুলি কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানিয়ে দিলেন – কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গভীর অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও সামরিক সম্পর্কের যুগ ‘শেষ হয়ে গেছে’।প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত যানবাহনের উপর উচ্চহারে শুল্কের পর এই কথা বলেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশে তৈরি গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন।বুধবার ট্রাম্প জানান আমেরিকায় আমদানি করা যানবাহন ও যানবাহনের সরঞ্জামের ওপর তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করছেন। তিনি এটাকে ‘স্থায়ী’ বলেও উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই কার্নি কানাডার ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনের আগে তার প্রচার সাময়িকভাবে থামিয়ে রেখে ওটাওয়ায় ফিরে আসেন। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলা বাণিজ্য যুদ্ধের কৌশল ঠিক করতে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বসেন। এমন পরিস্থিতিতে কানাডার নিজেদের অর্থনীতি নিয়ে মৌলিকভাবে ভাবা উচিত বলে মনে করেন মার্ক কার্নি। তিনি আরও বলেন, কানাডা প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এর সর্বোচ্চ প্রভাব পড়বে।
১৯৬৫ সালে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। লিবারেল পার্টির নেতা কার্নি ওই চুক্তিকে তাঁর দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন। সেই চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে কার্নি বলেন, ‘শুল্ক আরোপের মধ্য দিয়ে এটা শেষ হলো।’
তিনি ট্রাম্পের এই শুল্ককে ‘অন্যায্য’ আখ্যা দেন এবং বলেন যে এটা দু- দেশের মধ্যে চলা বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন। এছাড়াও তিনি কানাডাবাসীকে সতর্ক করে বলেন যে ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক স্থায়ীভাবে বদলে দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে কোনও বাণিজ্য চুক্তি হলেও ‘ফিরে যাওয়ার কোনো পথ নেই।’ কার্নি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি এবং নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে পুরানো সম্পর্ক ছিল, তা এখন শেষ।”
তিনি জানান, কানাডা এই শুল্কের জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। কার্নি বলেন, “এই নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিক্রিয়া হলো লড়াই, সুরক্ষা এবং গঠন। আমরা মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে আমাদের নিজস্ব বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেব, যার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ প্রভাব পড়বে এবং কানাডায় সর্বনিম্ন প্রভাব থাকবে।”
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর, কার্নি কানাডার ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনের আগে তার প্রচারণা সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে ওটাওয়ায় ফিরে আসেন। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণে মন্ত্রিসভার এক বৈঠক হয়। তিনি ট্রাম্পের এই শুল্ককে “অন্যায্য” আখ্যা দিয়ে বলেন যে এটি দুই দেশের মধ্যে থাকা বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন। এছাড়াও তিনি কানাডাবাসীকে সতর্ক করে বলেন যে ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থায়ীভাবে বদলে দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে কোনো বাণিজ্য চুক্তি হলেও “ফিরে যাওয়ার কোনো পথ নেই।”
তিনি জানান, কানাডা এই শুল্কের জবাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। কার্নি বলেন, “এই নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিক্রিয়া হলো লড়াই, সুরক্ষা এবং গঠন। আমরা মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে আমাদের নিজস্ব বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নেব, যার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ প্রভাব পড়বে এবং কানাডায় সর্বনিম্ন প্রভাব থাকবে।”
কার্নি বলেন, কানাডাকে এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা কানাডার মানুষই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে অন্য সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কানাডীয়রা ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক রাখতে পারে কি না, তা এখনও দেখা বাকি বলে উল্লেখ করেন কার্নি।
প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ১৪ মার্চ জাস্টিন ট্রুডোর জায়গার মসনদে বসেন। সাধারণত, নতুন কানাডীয় নেতা দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগকে গুরুত্ব দিলেও ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে এখনও কোনো কথোপকথন হয়নি। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, হোয়াইট হাউস থেকে ফোনে কথা বলার সময় নির্ধারণের জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তিনি আগামী ‘এক-দুই দিনের মধ্যে’ ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশা করছেন। তবে কার্নির বার্তা তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত, তবে তিনি ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত গভীর আলোচনায় অংশ নেবেন না, যতক্ষণ না প্রেসিডেন্ট কানাডাকে ‘সম্মান’ দেখান।
Leave a comment
Leave a comment
