যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক রদবদলের ঘোষণা এল রাজভবন থেকে। শুক্রবার রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সি ভি আনন্দ বোস আকস্মিকভাবে উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সম্প্রতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অশান্তির মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ভাস্কর গুপ্ত এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরই রাজভবনের এই সিদ্ধান্ত নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
উপাচার্যের অপসারণের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোতে এক গুরুত্বপূর্ণ শূন্যতা তৈরি হয়েছে। শিক্ষামহলে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ মনে করছেন, চলমান অশান্তি প্রশমনে এটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, আবার কেউ একে অপ্রত্যাশিত ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বলেই অভিহিত করছেন। নির্দেশ অনুযায়ী, ২৭ মার্চ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। অর্থাৎ, তিনি আর উপাচার্যের দায়িত্বে নেই। তবে এখন পর্যন্ত নতুন উপাচার্য কে হবেন, সে বিষয়ে কোনও ঘোষণা আসেনি।
চলতি মাসের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা চরমে ওঠে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এলে ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখোমুখি হন। সেই সময় তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন, আর তাঁর কনভয়ের ধাক্কায় এক ছাত্র আহত হয়। পরিস্থিতি শান্ত না হতেই উপাচার্য অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এই সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি মনে করেন, উপাচার্যকে আচমকা সরিয়ে দেওয়ার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে নেওয়া এই সিদ্ধান্তকে তিনি অযৌক্তিক ও অপ্রত্যাশিত বলেও উল্লেখ করেছেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দিনগুলো অনিশ্চয়তায় ঘিরে রয়েছে। উপাচার্যপদ শূন্য হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক কাজকর্মেও প্রভাব পড়তে পারে। শিক্ষামহল এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অনেকেই মনে করছেন, রাজভবনের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।
এখন সবার নজর রাজভবনের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার দিকে। সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই হলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়েও জল্পনা চলছে। শিক্ষা মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই টানাপোড়েন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে? আপাতত, গোটা ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছে ছাত্র, শিক্ষক এবং প্রশাসনিক মহল।
