আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুন মামলায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছেন শিয়ালদা অতিরিক্ত দায়রা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। বিচারক জানান, এই মামলা “বিরলের মধ্যে বিরলতম” নয়, তাই মৃত্যুদণ্ডের বদলে আমৃত্যু কারাদণ্ডই যথাযথ শাস্তি।
বিচারপতি সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬, ৩০২, ও ৬৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় দেন। পাশাপাশি ৫০,০০০ টাকা জরিমানা এবং নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারক বলেন, “আদালতের কাজ জনগণের ভাবাবেগ নয়, ন্যায়বিচারের স্বার্থ রক্ষা করা।”
তবে রায় ঘোষণার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারসহ অনেকেই অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি করেছিলেন। তাঁদের মতে, এই জঘন্য অপরাধে মৃত্যুদণ্ডই ছিল সঠিক শাস্তি।
অন্যদিকে বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এই রায়ের পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনি বলেন, “মৃত্যুদণ্ডের চেয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড কঠিন শাস্তি। বিচারক সমস্ত প্রমাণ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমার মতে, মৃত্যুদণ্ড থাকা উচিত নয়।”
এটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। রাজ্যে এর আগে পাঁচটি পকসো মামলায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এই মামলায় অভিযুক্তের ফাঁসি না হওয়ায় অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বিচারকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আবেগ নয়, আইনি কাঠামোর অখণ্ডতা রক্ষা করা প্রয়োজন। তবু এই রায় সমাজে ন্যায়বিচারের ধারণা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।