দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরই আম আদমি পার্টির (আপ) ভেতরে ফাটল আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বিজেপির বিপুল জয়ে কেজরীভালের দুর্গ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ৪৮টি আসন নিয়ে দিল্লির মসনদ দখল করেছে বিজেপি, আর ২২টি আসনেই আটকে গেছে কেজরীর দল। এই হার যে শুধু সাধারণ রাজনৈতিক পরাজয় নয়, বরং দলের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার প্রতিফলন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ফল ঘোষণার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আপের তিন কাউন্সিলর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ১৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের অনিতা বাসোয়া, ১৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিখিল চপ্রানা এবং ১৫২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মবীর দল ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেছেন। শুধু তাই নয়, কেজরীবালের বিধানসভা কেন্দ্র নয়া দিল্লির জেলা সভাপতি সন্দীপ বাসোয়াও আপ ত্যাগ করেছেন। এই দলবদল শুধু বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং আপের ভিতরকার গভীর টানাপোড়েনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আপের অন্দরমহলে আরও বড় ধাক্কা আসছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই দলীয় পর্যায়ে সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে। আসন্ন মেয়র নির্বাচনেও আপকে পর্যুদস্ত করতে মরিয়া বিজেপি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দলবদল আপের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, আপের ভাঙনের অন্যতম কারণ অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থার অভাব। নির্বাচনের আগে মদের দুর্নীতি মামলায় জড়িয়ে পড়া, বিরোধীদের আক্রমণ, এবং সাংগঠনিক অব্যবস্থার কারণে দলের প্রতি কর্মীদের অনীহা বাড়ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, আপের জন্য কঠিন সময় আসতে চলেছে। একদিকে বিজেপির রাজনৈতিক চাল, অন্যদিকে দলীয় বিভাজন—এই দুই চাপের মুখে কেজরীবাল কীভাবে দলকে ধরে রাখবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আপের জন্য আসন্ন সময় যে আরও সংকটপূর্ণ হতে চলেছে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত।