ইউক্রেন-রাশিয়া চলমান সংঘাতের মধ্যেই প্রথমবার আকাশযুদ্ধে নামানো হলো ফ্রান্সের তৈরি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান। দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য কিভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, শুক্রবার ইউক্রেনীয় সেনারা রুশ ড্রোন ও যুদ্ধবিমান প্রতিহত করতে এই উন্নতমানের ফরাসি ফাইটার জেট কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছে। কিয়েভের সামরিক কর্তৃপক্ষের মতে, মিরাজ-২০০০ মোতায়েনের ফলে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে এবং শত্রুপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করার সক্ষমতা বাড়বে।সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে এই বিমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য পশ্চিমা সামরিক সহায়তার পরিমাণ কমতে শুরু করেছিল। বিশেষ করে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের ইঙ্গিত দেন, তখন ইউরোপীয় দেশগুলো নতুন করে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেয়। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে শুক্রবার অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সদস্য দেশগুলো সম্মত হয় যে, ইউক্রেনের সামরিক শক্তি বাড়াতে আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হবে। একই সঙ্গে, প্রতিরক্ষা খাতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে ঋণনীতিতে শিথিলতার বিষয়েও আলোচনা হয় এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো সম্মিলিতভাবে ১৫ হাজার কোটি ইউরো (প্রায় ১৪ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা) ঋণ গ্রহণ করবে, যার একটি বড় অংশ ইউক্রেনের সামরিক সহায়তায় ব্যয় করা হবে। বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেনকে আরও সহযোগিতা করা জরুরি। তিনি সতর্ক করে দেন যে, “বর্তমান সংকট শুধু ইউক্রেনের নয়, বরং গোটা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্যও বিপজ্জনক। আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা এখন সময়ের দাবি।”
সূত্রের খবর, ফ্রান্স থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জন্য কিছুদিন আগেই মিরাজ-২০০০ পাঠানো হয়েছিল। এবার সেই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেই রুশ বাহিনীর আকাশ হামলা প্রতিহত করা হচ্ছে।
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করতে রাজি হলেও ইউক্রেনে হামলার তীব্রতা কমেনি। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাশিয়া ৫৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে এবং ২০০টিরও বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। পূর্বাঞ্চলের খারকিভ থেকে পশ্চিমের টারনোপিল পর্যন্ত ইউক্রেনের জ্বালানি ও কৌশলগত স্থাপনাগুলোর উপর রুশ বাহিনী হামলা চালাচ্ছে। তবে ইউক্রেনও মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
Leave a comment
Leave a comment