পাকিস্তানে ফের হামলা চালাল বালোচ বিদ্রোহীরা।পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তুরবাতে শনিবার একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি বিস্ফোরণের মাধ্যমে সেনার কনভয়ে হামলা চালানো হয়।শহরের মধ্যে দিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় এই বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়।প্রাথমিকভাবে এক ব্যক্তি নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী আহতদের মধ্যে আটজন গুরুতর অবস্থায় রয়েছে এবং বাকিরা স্থিতিশীল। রাস্তার পাশে পার্ক করা একটি গাড়িতে আইইডি রাখা ছিল এবং এটি দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বালুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা নিরীহ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করে, তারা মানুষ বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য নয়।”
গত মঙ্গলবারই জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করেছিল বালোচ বিদ্রোহীরা। পাক সেনার দাবি অনুযায়ী প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে বড় অভিযানে উদ্ধার হন যাত্রীরা। পাক সেনার দাবি করে যে সব বালোচ বিদ্রোহীর মৃত্যু হয়েছে এই অভিযানে।যদিও তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে বালোচ লিবারেশন আর্মি দাবি করে যে দারা-ই-বোলান নামের অভিযানে তাদের ১২ জন কর্মী নিহত হয়েছে। এর পর শনিবার পাক সেনার যাবতীয় তথ্য উড়িয়ে বালোচ বিদ্রোহীরা দাবি করে যে জাফর এক্সপ্রেস থেকে আটক করা ২১৪ জন বন্দী সেনাকে তারা হত্যা করেছে। বালোচ রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির জন্য চুক্তির ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর পাকিস্তানের তরফে কোনও যথাযথ উত্তর না পাওয়ায় তারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে।
এমন পরিস্থিতিরেই ফের তুরবাতে হামলার খবর সামনে এল।বালুচ লিবারেশন আর্মি এই বিস্ফোরণের দায়ও স্বীকার করেছে। একদিন আগেই শুক্রবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দক্ষিণে ওয়াজজিরিস্তানের একটি মসজিদে প্রার্থনার সময় আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও সন্দেহের তীর বিএলএ-র দিকেই। শনিবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সরকারি কাজের তদারকি করতে যাওয়া অফিসারদের গাড়ির কনভয়তে বন্দুকধারীরা গুলি চালায়। এই হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন।
এভাবেই এক সপ্তাহের মধ্যে একাধিক একাধিক এমন হামলার ঘটনা ভাঁজ ফেলেছে পাক শাসকদের কপালে।বালুচিস্তান পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ হলেও এটি সবচেয়ে কম জনবহুল এলাকা। অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বৈষম্যের শিকার বালুচ জাতিগত সংখ্যালঘুদের কেন্দ্রস্থল এটি।অভিযোগ প্রাকৃতিক গ্যাস, তামাসহ বিভিন্ন খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও, এখানকার জনগণ উন্নয়নের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাশাপাশি পাকিস্তান সরকার এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযোগও রয়েছে প্রচুর – যা বালোচ জনগণের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব গড়ে তুলেছে। এই অসন্তোষ থেকেই পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়ার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বালোচ লিবারেশন আর্মি।
Leave a comment
Leave a comment