এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই থাইল্যান্ডে হতে চলেছে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন আর এতে অংশ নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।এই সম্মেলনের ফাঁকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বৈঠক আয়োজনের লক্ষ্যে নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে ঢাকা।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী এবিষয়ে সংবাদসংস্থাকে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আমাদের দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২ থেকে ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ড সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে তিনি ব্যাংককে ষষ্ঠ BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।এর আগে ২০১৯ সালে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পর এটি হবে তাঁর দ্বিতীয় থাইল্যান্ড সফর।
বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) তার সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সাতটি অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রে সহযোগিতার চেষ্টা করে। তার মধ্যে আছে নিরাপত্তা,সন্ত্রাস দমন ও আন্তঃজাতিক অপরাধ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জ্বালানি, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবহন সংযোগ, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করা বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড নিয়েই হয় BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলন। থাইল্যান্ডের নেতৃত্বে এই ফোরাম ২০৩০ সালের মধ্যে ‘প্রো বিমস্টেক’ বা ‘সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল এবং উন্মুক্ত’ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। বিমস্টেক অঞ্চলে ১.৭ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস করে এবং এর মোট জিডিপি ৪.৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিমস্টেকের প্রতিটি সদস্যদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকলে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলা অসম্ভব।
গত আগস্ট মাসে আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।আর এই রাজনৈতিক পালাবদলে ধাক্কা খেয়েছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্ব।চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারি থেকে ক্রমেই বেড়ে চলা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বারবার সরব হয়েছে ভারত। যদিও নানা সময়ে নানাভাবে ভারতের সমালোচনা করে গেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর জেরে একসময়ের সুসম্পর্কে কিছুটা হলেও যেন পাঁচিল তুলে দিয়েছে ঢাকা। কিন্তু উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলতে গেলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের মত শক্তিশালী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে তার সুফল মেলে সহজেই। অশান্তির আবহে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকলেও বৈঠক সম্ভব হয় নি মোদি-ইউনুসের।তবে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেনের।এমন পরিথিতিতেই এবার সম্ভবত দূরত্ব ঘোচাতে চাইছে ইউনুস সরকার।
বিমসটেক একটি উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং স্থিতিশীল বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের জন্য আঞ্চলিক সম্পৃক্ততার একটি বাহন হিসেবে কাজ করে।আঞ্চলিক দেশগুলোর সুসম্পর্কের ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করা মানুষজন মনে করছে ভারতের উপর অহেতুক দোষারোপ ছেড়ে বাংলাদেশ আলোচনার পথে এগোলে সুফল মিলবে সহজেই।
Leave a comment
Leave a comment