২০২৬-২৭ শিক্ষা বর্ষ থেকে পাঠ্যক্রমে ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্ট বা বই খুলে পরীক্ষা চালুর প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিল সিবিএসই। পরীক্ষা ব্যবস্থাকে আরও বাস্তবমুখী এবং প্রয়োগভিত্তিক করে তোলার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। অর্থাৎ নতুন নিয়মে পাতার পর পাতা মুখস্থ করে এসে উত্তর লেখার দিন শেষ হতে চলেছে।
চলতি বছরের জুন মাসে সিবিএসই বা সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের গভর্নিং বডির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দেশের জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এই সিদ্ধান্ত।
নতুন নিয়মে খাতায়-কলমে হওয়া পরীক্ষা সূচির অংশ হিসেবেই বই দেখে লেখার নিয়ম চালু হচ্ছে। যার মধ্যে বিজ্ঞান, সোশ্যাল সায়েন্স, অঙ্কের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত।
সিবিএসই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে কারিকুলাম কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোচনা হয়েছিল। পরবর্তী কয়েক মাসের মধ্যে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই নতুন পদ্ধতির সুফল সম্পর্কে জানতে কয়েকটি নির্দিষ্ট স্কুলে এই নিয়ম চালু করা হয়েছিল। ওই সমস্ত স্কুলে পরীক্ষামূলকভাবে নবম ও দশম শ্রেণিতে ইংরেজি, বিজ্ঞান ও অঙ্কের বই দেখে লেখার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের।
অন্যদিকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে অঙ্ক, ইংরেজি এবং জীবন বিজ্ঞান বা বায়োলজির ক্ষেত্রে বই দেখে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। বই দেখে লিখলে ছাত্রছাত্রীরা কেমন ফলাফল করে, লিখতে তাদের কতটা সময় লাগে এসব বিষয়গুলি দেখে নেওয়া ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য।
ওই সমীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় পড়ুয়াদের সাফল্যের হার ছিল ১২ থেকে ৪৭ শতাংশের মধ্যে। যা দেখে শিক্ষকদের একাংশ বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। সিবিএসই বোর্ডের আশা এই উদ্যোগ পরীক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমাবে। মুখস্থ করে পড়াশুনা করার চিন্তাভাবনা থেকে সরে এসে বাস্তব প্রয়োগভিত্তিক ও ধারণাগত বোঝাপড়ার দিকে এগিয়ে যাবে পড়ুয়ারা।
ওপেন বুক পরীক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা উত্তর লেখার সময় ক্লাস নোট, টেক্সট বই বা লাইব্রেরি থেকে নেওয়া বই রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। এর উদ্দেশ্য হল শুধু মুখস্থ নয় বরং সঠিক জায়গায় ঠিক তথ্য ব্যবহার করতে পারা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উত্তরের প্রয়োগ এবং বিশ্লেষণের দক্ষতা যাচাই করা।