নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে জিএসটি স্ল্যাব কমানো নিয়ে বুধবারই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের নেতৃত্বে বসে দু-দিনের জিএসটি কাউন্সিল বৈঠক। ‘নেক্সট-জেন’ জিএসটি সংস্কারের পথে হেঁটে পণ্য পরিষেবা কর কাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে কেন্দ্র। জীবনবিমা এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিমায় জিএসটি পুরোপুরি মকুব করার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। আর এর পরেই উঠে এসেছে বিমা ক্ষেত্রে জিএসটি স্ল্যাব শূন্য করার পিছনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের কথা।
বুধবার জিএসটি বৈঠক শুরু হলেও ঠিক একদিন আগে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে তিনি বিমা ক্ষেত্রে জিএসটির বোঝা নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, “গভীর বেদনার সঙ্গে আপনাকে লিখছি জীবন বিমা ও স্বাস্থ্য বিমা নীতি/পণ্যে ১৮% জিএসটি আরোপ এবং নতুন কর কাঠামোতে আয়কর আইনের ৮০সি ও ৮০ডি ধারার অধীনে ছাড় প্রত্যাহারের বিষয়ে। আমার কাছে এই পদক্ষেপগুলো নিঃসন্দেহে জনবিরোধী। জীবন ও স্বাস্থ্য বিমার মূল উদ্দেশ্য হল অসুস্থতা, দুর্ঘটনা বা অকাল মৃত্যুর মতো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে আর্থিক নিরাপত্তা ও সহায়তা প্রদান করা। এই নীতিগুলো নিশ্চিত করে যে মানুষ এবং তাদের পরিবার যেন কঠিন সময়ে আর্থিক সংকট মোকাবিলা করতে পারে।”
তিনি লেখেন, ”আমরা সকলেই জানি, স্বাস্থ্যই সম্পদ। স্বাস্থ্যসেবা একটি বড় সামাজিক নিরাপত্তা, এবং সাধারণ মানুষের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমাদের প্রতিশ্রুতি সর্বোচ্চ মাত্রায় সামাজিক সুরক্ষা বিস্তার করা।”
এই চিঠিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, এই জনবিরোধী করনীতিগুলো পুনর্বিবেচনা করুন। জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা প্রিমিয়ামের ওপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করুন এবং নতুন কর কাঠামোয় আয়কর আইনের ৮০সি ও ৮০ডি ধারার অধীনে ছাড় পুনঃপ্রবর্তন করুন। এতে সাধারণ মানুষের বিমা গ্রহণের সুযোগ বাড়বে, আর্থিক ও মানসিক স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত হবে।”
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির একদিন পরেই কেন্দ্রের এমন পদক্ষেপ সামনে আসায় বিমায় জিএসটি প্রত্যাহার মমতার দাবি মেনেই হল বলে মনে করছেন অনেকে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, নবরাত্রির প্রথম দিন অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন জিএসটির হার কার্যকর হবে।
