আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তামিলনাড়ুর সঙ্গে অসমেও বিধানসভা নির্বাচন। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে বিজেপি-কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তাই কংগ্রেসকে একের পর এক ইস্যুতে আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার অসমের দরঙে জনসভায় প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে নিশানা করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, জনগণই তাঁর “প্রভু” এবং “রিমোট কন্ট্রোল”। তিনি বলেন, তাদের সামনেই তিনি নিজের বেদনা প্রকাশ করেন। নিজেকে ও তাঁর প্রয়াত মা হীরাবেনকে নিয়ে কটূক্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, তিনি শিবভক্ত এবং “অভিশাপের বিষ” গিলে নিতে প্রস্তুত।
মোদি বলেন, “আমি জানি কংগ্রেসের গোটা ইকোসিস্টেম আমাকে আক্রমণ করবে এবং বলবে—মোদি আবার কাঁদছে। কিন্তু জনগণই আমার ভগবান। তাদের সামনে না বললে আমি কোথায় বলব? তারা-ই আমার প্রভু, আমার দেবতা, আমার রিমোট কন্ট্রোল। আমার আর কোনো রিমোট কন্ট্রোল নেই।”
সম্প্রতি বিহারের নির্বাচনী প্রচারে আরজেডি-কংগ্রেস মঞ্চ থেকে মোদি ও তাঁর মা-কে নিয়ে অশালীন মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেস দাবি করেছে, ওই মন্তব্যের সময় তাদের কোনও নেতা উপস্থিত ছিলেন না। এরপর কংগ্রেসের তৈরি এক এআই ভিডিয়োতে প্রধানমন্ত্রীর মা-কে যুক্ত করার ঘটনায় আরও উত্তেজনা ছড়ায়।
প্রধানমন্ত্রী মোদি স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতে তিনি ‘রিমোট কন্ট্রোল’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করে অভিযোগ তুলেছিলেন যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-কে নিয়ন্ত্রণ করতেন সোনিয়া গান্ধী। একইভাবে তিনি অভিযোগ করেছেন, বর্তমান কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে-ও গান্ধী পরিবারের রিমোট কন্ট্রোলে পরিচালিত।
জওহরলাল নেহরুকে টেনে মোদি বলেন, ১৯৬২ সালের চিন যুদ্ধের পর দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছিলেন যে উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষত এখনও সেরে ওঠেনি। “আজকের কংগ্রেস সেই ক্ষতে লবণ ছিটাচ্ছে,” মন্তব্য করেন তিনি।
ব্রহ্মপুত্র নদে সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, “৬০–৬৫ বছরে কংগ্রেস মাত্র তিনটি সেতু বানিয়েছে। অথচ আমাদের সরকার মাত্র এক দশকে ছয়টি নতুন সেতু নির্মাণ করেছে।”
সন্ত্রাস দমনে অপারেশন ‘সিন্দূর’-এর উল্লেখ করে মোদি বলেন, কংগ্রেস শাসনে ভারতীয় সেনাবাহিনী কে পদক্ষেপ নিতে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু এখন ভারতীয় সেনা পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন করছে, আর কংগ্রেস পাকিস্তান সেনার সুরে সুর মিলিয়ে তাদের মিথ্যাচারকে নিজেদের এজেন্ডায় পরিণত করছে।
অসমে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে আক্রমণ শানিয়ে মোদি বলেন, “কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ভোটব্যাঙ্ক। দেশের কোনও পরোয়া তাদের নেই। তারা অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করে, উৎসাহ দেয়, আর এখন তাদের স্থায়ীভাবে বসতি গড়তে দিতে চাইছে। কংগ্রেস চায় এরা ভারতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করুক।”
