২০১৩ সালে ফাঁস হওয়া সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। সুদীপ্ত সেনের নেতৃত্বাধীন সারদা গ্রুপ প্রায় ১.৭ মিলিয়ন বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে, যা পরবর্তীতে ধসে পড়ে। এই কেলেঙ্কারির সাথে তৎকালীন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের নাম জড়িয়ে পড়ে, যা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতার নাম উঠে আসে। সারদা মিডিয়া গ্রুপের সিইও হিসেবে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের নিয়োগ এবং মন্ত্রী মদন মিত্রের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে থাকা এই সম্পর্কের গভীরতা নির্দেশ করে। এছাড়া, সারদা গ্রুপের মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে মিঠুন চক্রবর্তী এবং সাংসদ শতাব্দী রায়ের সম্পৃক্ততা এই সম্পর্ককে আরও জোরদার করে।
কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর, সিবিআই তদন্ত শুরু করে এবং তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করে, যার মধ্যে কুণাল ঘোষ, মদন মিত্র এবং সৃঞ্জয় বসু উল্লেখযোগ্য। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে, এবং সিবিআইয়ের তদন্তের ধীরগতির কারণে সমালোচনা হয়েছে। ২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত শ্বেতপত্রে সারদা কেলেঙ্কারির উল্লেখ করা হয়, যা তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর চাপ আরও বাড়ায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস বরাবরই এই অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে, এক দশক পেরিয়ে গেলেও সারদা কেলেঙ্কারির ছায়া এখনও তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর রয়ে গেছে, যা দলটির ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সারদা কেলেঙ্কারি পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে।