সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
দফায় দফায় বোর্ড মিটিং ও রাজনৈতিক অস্থিরতা শেষ করে অবশেষে মলয় রায়ের জায়গায় পানিহাটি পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান হলেন সোমনাথ দে। ইতিমধ্যেই পানিহাটির সর্বোচ্চ পুর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সোমনাথ। কে এই সোমনাথ দে? পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও আরজিকরের নিহত তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি সৎকারের ব্যবস্থা করেছিলেন এই সোমনাথ দে। যিনি আরজি করের নিহত চিকিৎসকের বাড়ির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর। এদিকে নানা টালবাহানার পর সোমনাথ পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান হওয়ায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সোমনাথের পুরো প্রধান হওয়ার সঙ্গে আরজিকরের ঘটনার যুগ খুঁজে পেয়েছেন বিরোধীপক্ষ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে আরজিকরের নিহত তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি সৎকারের পুরস্কার হিসেবে পানিহাটির চেয়ারম্যান পদের পুরস্কার পেলেন সোমনাথ বলে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা।
বস্তুত আজ সকাল থেকেই পানিহাটি পৌরসভা এলাকায় ছিল রাজনৈতিক ব্যস্ততা। গত দুদিন ধরে নতুন পুরো প্রধান কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। তৃণমূল পুরো বোর্ডের একাধিক বৈঠক হয় তা নিয়ে যদিও কোন সমাধান সূত্র মেলেনি। গতকাল বিকেল থেকেই সোমনাথ দে-র নাম পরবর্তী পুরপ্রধান হিসেবে চর্চায় আসে। আজ সকাল থেকেই তা নিয়ে ব্যস্ত হযে পড়েন তৃণমূল কাউন্সিলর। নিজেদের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক করেন তারা। সকালেই পানিহাটির বিধায়ক তথা বিধানসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতন নির্মল ঘোষ পানিহাটি পৌরসভায় আসেন এবং দলীয় কাউন্সিলর দের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা কাউন্সিলরদের জানানো হয় বলে পুরসভা সূত্রে জানা গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা অনুযায়ী হিসেবেই সোমনাথ দে-কে সর্বসম্মতিক্রমে পানিহাটি পৌরসভার পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করার আশ্বাস দেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। এরপরই নির্মল ঘোষ পানিহাটি পুরসভা থেকে বেরিয়ে যান এবং তারপরেই সর্বসম্মতিতে নাম ঘোষণা হয় সোমনাথের।
আরজিকরের নিহত তরুণী চিকিৎসকের দেহ তড়িঘড়ি সৎকারের ব্যবস্থা করার ই কি এই পুরস্কার? জবাবে সোমনাথ জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে তিনি তার কর্তব্য পালন করেছেন মাত্র। এরপরও যদি কোন প্রয়োজন হয় ওই পরিবারের তাহলে তিনি সবার আগে এগিয়ে যাবেন বলেও জানান সোমনাথ। যদিও নির্যাতিতার বাবা-মা জানিয়ে দেন, ” আমরা তো দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য দাবি জানিয়েছিলাম এবং অপেক্ষাও করছিলাম। উনিই তো তড়িঘড়ি সমস্ত ব্যবস্থা করে মেয়ের দেহ দাহ করিয়ে দিলেন। উনি আবার আমাদের কি উপকার করবেন?” আপাতত পানিহাটির চেয়ারম্যান পদে সোমনাথ বসলেও এই মুকুট তার কাছে ‘কাঁটার মুকুট’ হয় কিনা সেদিকেই নজর সকলের।